Technical Analysis 9
‘ইন্ডিকেটর (RSI, MFI এবং MACD)’ গত দিন আমরা আপনাদেরকে RSI, MFI এবং MACD ইন্ডিকেটরগুলো কি এবং এদের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা দিয়েছিলাম। আজ আপনাদের এদের সম্পর্কে আরও একটু বিস্তারিতভাবে জানানোর চেষ্টা করবো; যাতে করে টেকনিক্যাল এনালাইসিসের নতুন শিক্ষার্থী হিসেবে এদের কিভাবে, কখন ব্যবহার করা যায় এ সম্পর্কে আপনাদের পরিষ্কার ধারণা সৃষ্টি হয়। তবে শুরুতেই বলে রাখছি সম্পূর্ণ ইন্ডিকেটরের উপর নির্ভর করে ট্রেড করা বোকামি হবে আর ইন্ডিকেটর থেকে ট্রেড কনফার্মেশন পাবার জন্য ডাইভারজেন্স সম্পর্কেও ভালো জ্ঞান রাখতে হবে। সত্যি কথা বলতে ডাইভারজেন্স জানলে ইন্ডিকেটর ব্যবহার করে ট্রেড করা অনেক সহজ হয়ে যায়। ডাইভারজেন্স হচ্ছে শেয়ারের দামের বিপরীতে এর সাথে সংশ্লিষ্ট কোন ইন্ডিকেটরের (MACD/RSI/MFI) এর বিপরীতমুখী আচরণ।
RSI-Relative Strength Index: গত সপ্তাহে আপনাদেরকে জানিয়েছি RSI হচ্ছে কোন শেয়ারের overbought/oversold অবস্থা নির্ণয় করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি ইন্ডিকেটর যা ১৯৭৮ সালে বিখ্যাত টেকনিক্যাল এনালিস্ট J. Welles Wilder তাঁর New Concepts in Technical Trading Systems বইয়ে আগের থেকে আরো উন্নত করে উপস্থাপন করেন। এই ইন্ডিকেটরের পুরো নাম দেখে আপনাদের মনে হতে পারে এটি জেনারেল ইন্ডেক্স এর সাথে কোন শেয়ারের মুভভেন্ট এর তুলনা করে থাকে কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এটি শেয়ারটির নিজস্ব অভ্যন্তরীণ শক্তির (ফান্ডামেন্টাল & টেকনিক্যাল) পরিমাণকে সংখ্যার মাধ্যমে প্রকাশ করে থাকে।
এই ইন্ডিকেটরের এই বৈশিষ্ট্যের জন্য এর আরেকটি নাম হতে পারে “Internal Strength Index.” যখন Wilder RSI কে ডেভেলপ করে আরও উন্নত করলে তখন তিনি এটার আদর্শ মান ১৪ দিনেরটিকে ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছেন। তবে ১৪ দিনের RSI মানের পাশাপাশি ৯ আর ১৫ দিনের RSI ভ্যালুও বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। আপনি কোন ভ্যালু ব্যবহার করবেন তা চার্টের সাহায্যে ঠিক করে নিবেন। হয়তো আপনি ১০ দিনের RSI ভ্যালুতে ভালো রেজাল্ট পেতে পারেন। RSI মান মূলত শেয়ারের মূল্যের সাথে সম্পর্কযুক্ত যার রেঞ্জ হচ্ছে ০ থেকে ১০০ পর্যন্ত। সাধারণত সবাই কোন শেয়ারের RSI মান ৩০ হলে সেটায় বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হয় আর মান ৭০ এর ঘরে চলে গেলে বিক্রি করার প্রবণতা দেখায়। তবে RSI এর সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যবহার হল ডাইভারজেন্স খুঁজে বের করাতে। ডাইভারজেন্স কি তা আপনাদের শুরুতেই বলেছি এবং এও বলেছি যে ইন্ডিকেটর নিয়ে ট্রেড করতে গেলে ডাইভারজেন্স জানতে হবে এবং প্রয়োগও করতে হবে। যাই হোক, TA এর নতুন শিক্ষার্থী হিসেবে আপনিএখনি ডাইভারজেন্স শেখার জন্য যথেষ্ট উপযুক্ত নন। ডাইভারজেন্স ছাড়া আপনি RSI খুব সহজে যেইভাবে ব্যবহার করতে পারেন তা হল RSI এর মান ৩০ এর নিচে নামলে শেয়ারটি ক্রয় এবং RSI এর মান ৭০ এর উপরে উঠলে শেয়ারটি বিক্রয় করা। তবে সব সময় যে RSI ৩০ হলে শেয়ারের দাম বাড়বে এবং ৭০ হলে শেয়ারের দাম কমবে তা ভাবা ঠিক নয়। মার্কেটে চাহিদা আর যোগানের উপর ভিত্তি করে শেয়ারের দাম পরিবর্তিত হয়। RSI নির্ণয় করার সূত্রঃ.RSI গননা করার জন্য প্রথমে আপনাকে RS নির্ণয় করতে হবে। RS নির্ণয় করার ফর্মুলা নিচে দেয়া হলঃ RS = Average Gain / Average Loss এভারেজ গেইন ও এভারেজ লস নির্ণয় করার শেষ ১৫টি পিরিয়ড এর গেইন অথবা লস নির্ণয় করতে হয়। এজন্য নিচের
পদ্ধতি অনুসরন করা হয়ঃ.Average Gain = Sum of Gains over the past 15 periods / 15 Average Loss = Sum of Losses over the past 15 periods / 15 এবার আপনি RS এর ভ্যালু থেকে RSI নির্ণয় করতে পারবেন। RSI নির্ণয় করার ফর্মুলাঃ RSI = 100 – (100/1 + RS)
MFI (Money Flow Index): এই ইন্ডিকেটরের ফর্মুলাতে শেয়ারের ক্রয় ও বিক্রয় চাপ বোঝাতে শেয়ারের মূল্য ও ভলিউমের ব্যবহার করা হয়েছে, যার ফলে Gene Quong এবং Avrum Soudack এর আবিষ্কৃত Money Flow Index ইন্ডিকেটরটি সব দেশের বিনিয়োগকারীদের কাছে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এর ব্যবহার বেশ সহজ। MFI এর আরেক নাম volume-weighted RSI । এর নামের মধ্যেই এর দ্বারা কি ধরণের এনালাইসিস করা হবে তা বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। Money Flow অর্থাৎ নির্দিষ্ট কোন শেয়ারে বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়ছে নাকি কমে যাচ্ছে সেই ব্যাপারটাই এই ইন্ডিকেটরের সাহায্যে পর্যবেক্ষণ করা হয়। কোন শেয়ারের মূল্য বৃদ্ধির সাথে সাথে যদি সেই শেয়ারের MFI ইন্ডিকেটরের মান বৃদ্ধি পায় তাহলে বুঝা যায় শেয়ারটিতে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ আছে এবং এ থেকে মুনাফা পাবার সম্ভাবনা আছে। আবার কোন শেয়ারের মূল্য হ্রাসের সাথে সাথে যদি সেই শেয়ারের MFI.ইন্ডিকেটরের মান হ্রাস পায় তাহলে বুঝা যায় শেয়ারটিতে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ নেই এবং এ থেকে মুনাফা পাবার সম্ভাবনাও আপাতত নেই।