বাজার বিশ্লেষণ :- সপ্তাহের শেষদিন বৃহস্পতিবার দেশের শেয়ার বাজারে মাঝারি আকারের উত্থান ঘটেছে। এদিন দেশের প্রধান শেয়ার বাজার ডিএসই ব্রড ইনডেক্সটি আগের দিনের চেয়ে ৪৮.১৩ পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়ে ক্লোজ হয়েছে ৫৮৪১.১৯ পয়েন্টে। ফলে ফের পতনের আশংকা কাটিয়ে ডজি ক্যান্ডেল থেকে বেরিয়ে ডিএসই চার্টে বুলিশ ক্যান্ডেল তৈরি করে বাজার আপট্রেন্ডে অবস্থান করছে।টেকনিক্যাল এনালাইসিস অনুযায়ী আকস্মিক কোনো নেতিবাচক খবর না আসলে এই বুলিশ ক্যান্ডেলের প্রভাবে আরো কয়েকদিন উত্থানের ধারাবাহিকতা বজায় থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার ডিএসই ব্রড ইনডেক্স ৫৭৯৩.০৫ পয়েন্টে ওপেন হয়ে ঊর্ধ্ব মুখী প্রবনতায় লেনদেন শুরু হলেও ১৯ মিনিটের মাথায় বেলা ১০টা ৪৯ মিনিটে ইনডেক্স নিন্মমুখী হয়ে যোগ হওয়া পয়েন্ট হারাতে থাকে। বেলা ১১টা ২৭ মিনিটে আগের দিনের চেয়ে ২০ পয়েন্ট হারিয়ে দিনের সর্বনিম্ন ৫৭৭৬.৪৪ পয়েন্টে নেমে আসে। বেলা সাড়ে এগারো টা থেকে ইনডেক্স পুনরায় ঘুরে দাঁড়ানো র চেষ্টা করে যা শেষ অবধি অব্যাহত থাকে। বেলা ১ টা পর্যন্ত ইনডেক্স এবং লেনদেন কিছুটা স্লো থাকলেও ১ টার পর ইনডেক্স ও লেনদেনে তুলনামূলক গতি পায় যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থার প্রতিফলন বলেই ধারনা করা হচ্ছে। গতমাসের টানা পতনে বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা নড়বড় হয়ে পড়ছিল যা বৃহস্পতিবারের স্বাভাবিক উত্থানে আস্থা মজবুত হয়ে বিনিয়োগকারীদের মনে প্রত্যাশার জন্ম দিয়েছে। গত সপ্তাহে বাজারে চাঙ্গাভাব ফেরানোর মূল ভূমিকায় ছিল বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক বাণিজ্যিক ব্যাংক গুলোর ১% সি আর আর কমানোর প্রজ্ঞাপন। যদিও বাণিজ্যিক ব্যাংক গুলো সি আর আর এর টাকা গুলো এখনো হাতে পায়নি কিন্তু এই প্রজ্ঞাপনের সাথে সাথে শেয়ার বাজারে ব্যাংক গুলোর সেল প্রেশার অনেকটা কমে গেছে। কেননা সি আর আর থেকে টাকা পেলে গ্রাহকদের চাহিদা মেটানো সহ তারল্য সংকট কাটাতে ব্যাংক গুলোকে শেয়ার সেল দিতে হবে না। শেয়ার বাজারের সাময়িক সংকট কাটাতে সি আর আর প্রজ্ঞাপন এন্টিবায়োটিকের মত কাজ করেছে। গত একমাসের পতনে লালে রঞ্জিত আগুনে পোড়া মার্কেটে সি আর আর প্রজ্ঞাপনের প্রভাবে নতুন কুড়ি দিয়ে সবুজের সমারোহ দেখা গেছে। এদিকে যেভাবে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সি আর আর আদায় করা হয়েছে ঠিক সেভাবে এক্সপোজার লিমিট সংশোধন করানো হতে পারে বলে বাজারে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। বাজারে ব্যাংক গুলোর বহুলাংশে বিনিয়োগের প্রধান অন্তরায় হচ্ছে এক্সপোজার লিমিট। এক্সপোজার লিমিটকে সংশোধন করে মার্কেট প্রাইস বাদ দিয়ে যদি কস্ট প্রাইস ধরা হয় তাহলে ব্যাংক গুলো ডে ট্রেডিংয়ের মানুষিকতা থেকে বেরিয়ে আসবে ফলে বাজার দীর্ঘ মেয়াদে স্বাভাবিক হবে। এক্সপোজার লিমিট যদি মার্কেট প্রাইসই থেকে যায় তাহলে দুচারদিন মার্কেট বৃদ্ধি পেয়ে যখন ব্যাংক গুলো প্রফিটের কারণে তাদের বেধে দেয়া লিমিট ক্রস করবে তখনই তারা বাধ্য হয়ে সেল দিয়ে লিমিটের ভেতর আসতে চাইবে। ফলে পজিটিভ মুভমেন্টে থাকা গতিশীল মার্কেটটিও তাদের সেল প্রেশারে অস্থির হয়ে পতন তরান্বিত করবে। সুতরাং বাজারকে দীর্ঘ মেয়াদে গতিশীল করতে হলে এক্সপোজার লিমিট সংশোধনের বিকল্প নেই বলে মনে করছি।
সপ্তাহের শেষদিন বৃহস্পতিবার লেনদেন হয়েছে ৫৭২ কোটি টাকা। দর বেড়েছে ২০৪ টি,কমেছে ৮৭ টি এবং অপরিবর্তিত আছে ৪৫ টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট দর। বাজারের সর্বশেষ Rsi 57.5, Mfi 54.83, Asi -1408.7, এবং CCI -132.94।