ব্যাংক এক্সপোজার লিমিট নামক বাক্যটি এখন শেয়ার বাজারের উত্তান পতনের যন্ত্রে পরিনত হয়েছে।এই যন্ত্রকে প্রাতিষ্টানিক,দক্ষ বিনিয়োগকারী এবং গেম্বলাররা গেম্বলিংয়ের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছেন।এক্সপোজার লিমিট করার পর থেকেই দেখা যাচ্ছে যখনই এক্সপোজার লিমিটের সমন্বয় করার সময় ঘনিয়ে আসে তার ৪-৫ মাস আগে থেকেই বাজারে ধারাবাহিক পতন শুরু হয়।ইনডেক্স কমতে কমতে শেয়ার দর যখন তলানীতে এসে ঠেকে তখন প্রাতিষ্টানিক বিনিয়োগকারীরা বাজারকে সাপোর্ট দেয়ার নামে বাজার কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের বিভিন্ন দাবী তুলে ধরেন।পাশাপাশি ধাপে ধাপে তলানীতে পড়ে থাকা শেয়ার গুলো কিনে তাদের পোর্টপোলিও লোড দিতে থাকেন। দরপতনের অজুহাতে একপর্যায়ে এক্সপোজার লিমিটের সময় বাড়িয়ে বাজারকে সেন্টিমেন্টাল সাপোর্ট দিয়ে ইনডেক্স কয়েকমাস স্বাভাবিক রাখা হয়।আবার যখন এক্সপোজারের লিমিটের মেয়াদ ঘনিয়ে আসে তখন প্রাতিষ্টানিক বিনিয়োগকারীরা সমন্বয়ের নামে প্রফিট নিয়ে বেরিয়ে আসে।এভাবেই গত ৪-৫ বছর ধরে এক্সপোজার লিমিটকে একদিকে দাবী আদায়ের হাতিয়ার অন্যদিকে বাজারে উত্তান পতন ঘটিয়ে শেয়ার কেনা ও বিক্রির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।ফলে এই এক্সপোজার লিমিটের বলি হচ্ছে সাধারন নন এক্সপার্ট তথা অদক্ষ বিনিয়োগকারীরা।২০১০ সালের মহা পতনের পর বাংলাদেশ ব্যাংক শেয়ার বাজারকে ঝুকিপূর্ন খাত হিসেবে আখ্যায়িত করে ব্যাংক গুলোকে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের লাগাম টেনে ধরতে এক্সপোজার লিমিটের নামে বিনিয়োগের সীমা নির্ধারন করে দেয়।
মূলত এই এক্সপোজার লিমিট করার পর থেকেই বাজারে নোংরা খেলা চলছে।অর্থ্যাৎ বাজার ৪ মাস ভাল তো ৬ মাস খারাপ।অতএব বোঝা যাচ্ছে যতদিন এই লিমিট বাড়ানোর খেলা চলবে ততদিন বাজারে সারা বছর বিনিয়োগের পরিবেশ থাকবে না।তাই বাজারকে স্থায়ীভাবে স্বাভাবিক করার ইচ্ছা থাকলে এই এক্সপোজার লিমিটকে একেবারে বাতিল করে বাজারকে তার নিজস্ব গতিতে চলতে দেয়া উচিত।বাংলাদেশ ব্যাংক হয়তঃ মনে করতে পারে শেয়ার বাজারের মত এত ঝুকিপূর্ন খাতে আমরা বিনিয়োগ করব না! আমাদের কথা হল ব্যাংক গুলো বিনিয়োগ করুক বা না করুক সেটা তাদের নিজেদের ব্যপার।কিন্তু কিছু দিন পর পরই এক্সপোজার লিমিটের নামে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগে ব্যাংকের হাত পা বেধে রাখার খবরটি কি ডাকঢোল পিটিয়ে না দিলে কি হয় না? শেয়ার বাজার যেহেতু স্পর্শকাতর জায়গা সেহেতু বাজার ভাল করার ইচ্ছা থাকলেতো ডাকঢোল না পিটিয়ে ব্যাংক গুলোর সাথে রুদ্বদ্বার বৈঠক করেও বিনিয়োগ সীমায় নিয়ে আসার কৌশল বের করা যায়।বাজারকে এভাবে অস্থিতিশীল করে শুধু তো সাধারন বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি হচ্ছে না প্রাতিষ্টানিক বিনিয়োগকারীসহ গোটা দেশের অর্থনীতিতে এর বিরুপ প্রভাব পড়ছে।তাছাড়া শেয়ার বাজারে সারা বছর পতন থাকলেও নির্বাচনের সময় অধিকাংশ রাজনৈতিক নেতাদের হলফ নামায় দেখা যায় ইনকাম সোর্স শেয়ার বাজার ! শেয়ার বাজার যদি এতই ঝুকিপূর্ন হয় তাহলে রাজনীতিবিদরা এই বাজার থেকে এত টাকা কিভাবে ইনকাম করেন জনমনে সেই প্রশ্নই দেখা যাচ্ছে ।