ডি এসকে কামরুল, ঢাকা ঃ সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবার ডিএসই ব্রড ইনডেক্সটি আগের দিনের চেয়ে ৫৯.২৮ পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়ে ক্লোজ হয়েছে ৫৪৬৭.৭৪ পয়েন্টে। ডিএসই চার্ট বিশ্লেষণে দেখা যায়, সকাল সাড়ে দশটায় ডিএসই ব্রড ইনডেক্সটি ৫৪০৮.৪৬ পয়েন্টে ওপেন হয়ে বেলা বাড়ার সাথে সাথে ডিএসই ব্রড ইনডেক্সটি বাড়তে থাকে, ইনডেক্স বৃদ্ধির সাথে পাল্লা দিয়ে দর বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানির সংখ্যাও বাড়তে থাকে।
বেলা ১০ টা ৫৮ মিনিটে আগের দিনের চেয়ে ৫০ পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়ে ৫৪৫৯.৮২ পয়েন্টে গিয়ে ইনডেক্সের ঊর্ধ্বমুখী গতি কিছুক্ষণের জন্য থেমে যায়।তারপর প্রফিট তুলে নেয়ার সেল প্রেশারে ইনডেক্সের গতিপথ পাল্টে ধীরগতিতে নিচের দিকে নামতে থাকে এবং বেলা ১১ টা ৪১ মিনিটে যোগ হওয়া ৫০ পয়েন্ট থেকে ১৫ পয়েন্ট হারিয়ে ৫৪৩৪.৭০ পয়েন্টে অবস্থান করে। পরে আবারো ইনডেক্সের গতিপথ পাল্টে ঊর্ধ্বমুখীতায় ফিরে দিনভর কোনো প্রকার স্পিড ব্রেকার ছাড়াই উচ্চ থেকে উচ্চতায় উঠতে থাকে।বেলা ১ টা ৩৮ মিনিটে দিনের সর্বোচ্চ ৫৪৭৯.৪৩ পয়েন্টে উঠে। ওইদিনের সর্বনিম্ন পয়েন্ট ছিল ওপেনিং পয়েন্ট। এতে বোঝা যায় দিনের কোনো সময়ই ওপেনিং পয়েন্টের নিচে আসেনি। অর্থাৎ ঊর্ধ্বমুখী প্রবনতায় মার্কেট শুরু হয়ে সারাদিন ঊর্ধ্বমুখীতা বিরাজ করে দিনশেষে ঊর্ধ্বমুখী অবস্থান ধরে রেখেই মার্কেট ক্লোজ হয়েছে। ফলে ডিএসই চার্টে বুলিশ ক্যান্ডেল তৈরি হয়েছে যা আপট্রেন্ডে অবস্থান করছে বলে সবুজ রংয়ের বুলিশ ক্যান্ডেলটি সংকেত দেয়।এদিন লেনদেন হয়েছে ৫৮০ কোটি টাকা, দর বেড়েছে ২১৭ টি, কমেছে ৯১ টি এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৭ টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট দর। বৃহস্পতিবার ব্যাংক ও ইন্সুরেন্স খাতের আধিপত্য ছিল চোখে পড়ার মত। এদিন ব্যাংক খাতের লেনদেন হওয়া ৩০ টি ব্যাংকের মধ্যে সবকটির দর বৃদ্ধি পেয়ে খাত ভিত্তিক দর বৃদ্ধির শতভাগের তালিকায় উঠে এসেছে। তাছাড়া পাট, পেপার এন্ড প্রিন্টিং, টেলিকমিউনিকেশন এবং বন্ড খাতেও শতভাগ দর বৃদ্ধি পেয়েছে। ইন্সুরেন্স খাতে লেনদেন হওয়া ৪৭ টি ইন্সুরেন্সের মধ্যে দর বেড়েছে ৪০ টির, কমেছে ৩ টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৪ টি ইন্সুরেন্স কোম্পানির শেয়ারের দর। বৃহস্পতিবার লেনদেনের শীর্ষে ছিল ইঞ্জিনিয়ারিং খাত, দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল টেক্সটাইল খাত। তবে দু খাতেরই আগের দিনের চেয়ে লেনদেন কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। ওইদিন ৩০-৫০ কোটি টাকার পেইড আপ কোম্পানি গুলোতে আগ্রহ ছিল সবচেয়ে বেশি। ক্রেতাদের ৮১.৮২% আগ্রহ ছিল ৩০-৫০ কোটির পেইড আপ কোম্পানি গুলোতে। ১০০ এর বেশি পি ই রেশিওর কোম্পানি গুলোতে আগ্রহ ছিল ৭২.৭৩% ক্রেতাদের। জেড ক্যাটেগরিতে আগ্রহ ছিল ৭৬.৭৪%, ১০-২০ টাকার শেয়ারে আগ্রহ ছিল ৭৩.৪২%। পজিটিভ ইন্ডেক্স মুভারে আধিপত্য বিস্তার করেছে জিপি,ব্র্যাক ব্যাংক,আইসিবি,আইডিএলসি,সিটি ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক ও রুপালী ব্যাংক। নেগেটিভ ইনডেক্স মুভারে আধিপত্য বিস্তার করেছে ইউনাইটেড পাওয়ার, বিএটিবিসি,স্কয়ার ফার্মা,রেনেটা,কেপিসিএল,ইফাদ অটো এবং কেডিএস। বাজারের নিকটতম রেজিষ্টেন্স ৫৫৪০ পয়েন্ট, বর্তমান আর এস আই ৬৩.৮০, এম এফ আই ৫১.৮৭ এবং সিসি আই ১৬৫.৪। চার্টের ইনডিকেটর গুলো বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায় যে,বাজার কয়েকদিন যাবতই আপট্রেন্ডে অবস্থান করছে,এটা ইতিবাচক লক্ষণ, তবে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ইনডেক্স বৃদ্ধি পেলেও ধীরগতিতে সার্বিক বাজারের লেনদেন কমে আসছে, এটা গতিশীল বাজারের অশুভ লক্ষণ। ইনডেক্সের সাথে তাল মিলিয়ে যদি টার্নওভার বৃদ্ধি না পায় তাহলে ঊর্ধ্বমুখী ধারা ধরে রাখা কঠিন হতে পারে।আবেগ পরিহার করে লেনদেনের সময় মনে রাখা দরকার যে, শেয়ার বাজার ঝুকিপূর্ণ, বাজার যতই আপট্রেন্ডে থাকুক সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করলে লোকসান গুনতেই হবে। শেয়ার বাজার কারো ভুল ক্ষমা করে না।