Technical Analysis -11
Trend Line (Part – 1)
Trend line: টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিসের সবচেয়ে প্রচলিত এবং জনপ্রিয় একটি টুলস হল ট্রেন্ড লাইন। ট্রেন্ড লাইন সহজেই বোঝা যায়। ট্রেন্ড লাইন যদি সঠিকভাবে আকা যায় তবে তা অন্য যেকোনো মেথড থেকে ভাল ফলাফল দেয়। কিন্তু অধিকাংশ ট্রেডার সঠিকভাবে ট্রেন্ড লাইন আঁকতে পারে না এবং জোর করে ট্রেন্ড লাইন আঁকে যার ফলে তা কার্যকর হয় না। ট্রেন্ড লাইন আঁকতে লো পয়েন্টগুলো একটি ট্রেন্ড লাইনের মাধ্যমে কানেক্ট করতে হয় এবং হাই পয়েন্টগুলো একটি ট্রেন্ড লাইনের মাধ্যমে কানেক্ট করতে হয়। যদি কোন ক্যানডেল ট্রেন্ড লাইন ক্রস করে ওপরে বা নিচে চলে যায়, তখন বুঝতে হবে ট্রেন্ড লাইন ব্রেক হয়েছে। ভালো টেকনিক্যাল এনালিস্ট হবার জন্য ট্রেন্ডলাইনের উপর অবশ্যই আপনার ভালো দক্ষতা থাকতে হবে। ট্রেন্ডলাইন আঁকার মূল ও প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে আগে থেকেই শেয়ারের সম্ভাব্য সাপোর্ট ও রেজিস্টান্স খুঁজে বের করা। এই পূর্বানুমান থেকে খুব সহজেই একজন বিনিয়োগকারী বুঝতে পারবেন কখন তার শেয়ার ক্রয় করতে হবে আর কখন বিক্রয় করতে হবে। তাই, ভালো টেকনিক্যাল এনালিস্ট হবার জন্য ও লাভজনক ট্রেড করার জন্য আপনাকে অবশ্যই সঠিকভাবে ট্রেন্ডলাইন আঁকা শিখতে হবে।
একটা ভুল ট্রেন্ডলাইন আপনার পোর্টফলিওকে মরুভূমি বানিয়ে দেবার জন্য যথেষ্ট। অনলাইনে ঘাঁটাঘাঁটি করে ট্রেন্ডলাইনের বিভিন্ন ছবি দেখে আপনার হয়তো মনে হতে পারে ট্রেন্ডলাইন আঁকা খুবই সোজা। শুধু সুইং হাই আর লো কানেক্ট করে দাগ টানতে পারলেই হয়ে গেল। এত সহজ জিনিস শিখে তাহলে কি লাভ? যদি আপনি এই রকম মনে করে থাকেন তাহলে আপনি ভুল ভাবছেন। কেন ভুল ভাবছেন তা পড়ে বলব। তার আগে চলুন জেনে নিই ট্রেন্ডলাইন কয় ধরনের হতে পারে।
ট্রেন্ডলাইন ৩ ধরণের হতে
পারে।
১. ঊর্ধ্বমুখী বা আপট্রেন্ড
২. নিম্নমুখী বা ডাউনট্রেন্ড
৩. পাশাপাশি বা
সাইডওয়েসট্রেন্ড
১. ঊর্ধ্বমুখী বা আপট্রেন্ডঃ সচরাচর ঊর্ধ্বমুখী ট্রেন্ডলাইনে দেখা যায় শেয়ারের মূল্য বাড়তে। ট্রেন্ডলাইন যত বেশি স্ট্রং হবে শেয়ারের সাপোর্ট তত বেশি শক্তিশালী হবে আর দামের ঊর্ধ্বমুখী ধারাও অব্যাহত থাকবে। ঊর্ধ্বমুখী ট্রেন্ডলাইন আঁকার জন্য শেয়ারের ক্যান্ডেলস্টিকগুলোর নিচের বা লো প্রাইস (দুই বা ততোধিক) পয়েন্ট ধরে আঁকতে হবে। ঊর্ধ্বমুখী ট্রেন্ডলাইনে শেয়ারের ২য় লো প্রাইসকে অবশ্যই ১ম লো প্রাইসের তুলনায় বেশি থাকতে হবে। আপট্রেন্ড লাইন শেয়ারের সাপোর্ট হিসেবে কাজ করে এবং এ দ্বারা বুঝায় যে শেয়ারের সাপ্লাই এর তুলনায় ডিমান্ড বেশি তাই শেয়ারের মূল্য বৃদ্ধি হচ্ছে। কোন শেয়ারের মূল্য ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ট্রেন্ডলাইনের উপর থেকে গড় ভলিউম বৃদ্ধির সাথে যদি বুলিশ ভাব অব্যাহত থাকে তাহলে সেই শেয়ারের ট্রেন্ডলাইনকে শক্তিশালী আপট্রেন্ড নির্দেশক বলে মনে করা হয়। যদি কোনোভাবে শেয়ারের দাম এই দৃঢ় ও শক্তিশালী ট্রেন্ডলাইনকে ভেঙ্গে নিচের দিকে যায় তাহলে আপট্রেন্ড শেষের দিকে বলে ধরে নেওয়া হয়।
২. নিম্নমুখী বা ডাউনট্রেন্ডঃ নিম্নমুখী ট্রেন্ডলাইনে দেখা যায় শেয়ারের মূল্য কমতে। ডাউনট্রেন্ডে ট্রেন্ডলাইন যত বেশি স্ট্রং হবে শেয়ারের রেজিস্টান্স ততবেশি শক্তিশালী হয় আর দামের নিম্নমুখী ধারাও কন্টিনিউ করতে থাকবে। নিম্নমুখী ট্রেন্ডলাইন আঁকার জন্য শেয়ারের ক্যান্ডেলস্টিকগুলোর উপরের বা হাই প্রাইস (দুই বা ততোধিক) পয়েন্ট ধরে আঁকতে হবে। নিম্নমুখী ট্রেন্ডলাইনে শেয়ারের ২য় হাই প্রাইসকে অবশ্যই ১ম হাই প্রাইসের তুলনায় কম হতে হবে। ডাউন ট্রেন্ডলাইন শেয়ারের রেজিস্টান্স হিসেবে কাজ করে এবং এ দ্বারা বুঝায় যে শেয়ারের ডিমান্ড এর তুলনায় সাপ্লাই বেশি তাই শেয়ারের মূল্য হ্রাস হচ্ছে। কোন শেয়ারের মূল্য নিম্নমুখী ধারায় ট্রেন্ডলাইনের নিচে থেকে ভলিউম বৃদ্ধির সাথে যদি বিয়ারিশ ভাব অব্যাহত থাকে তাহলে সেই শেয়ারের ট্রেন্ডলাইনকে শক্তিশালী ডাউনট্রেন্ড নির্দেশক বলে মনে করা হয়। যদি কোনোভাবে শেয়ারের দাম এই দৃঢ় ও শক্তিশালী ট্রেন্ডলাইনকে ভেঙ্গে উপরের দিকে যায় তাহলে ডাউনট্রেন্ড শেষের দিকে বলে ধরে নেওয়া হয়।
৩. পাশাপাশি বা সাইডওয়েসট্রেন্ডঃ সাইডওয়েসট্রেন্ডে ক্যান্ডেলস্টিক পাশাপাশি অবস্থানে থাকে। সাইডওয়েসট্রেন্ডে শেয়ারের আপ বা ডাউন কোন ট্রেন্ডের ক্লিয়ার ভিউ থাকে না বলে অভিজ্ঞ টেকনিক্যাল এনালিস্টরা এই ট্রেন্ডে শেয়ার ক্রয়, বিক্রয় থেকে বিরত থাকেন। ট্রেন্ড লাইন সম্পর্কে কিছু জরুরি তথ্যঃ অন্তত ২টি টপ (top) অথবা বটম (bottom) পয়েন্ট সংযুক্ত করে ট্রেন্ড লাইন আঁকতে হয়। তবে ৩টি পয়েন্ট হলে ট্রেন্ড লাইন কনফার্ম হয়। সাপোর্ট এবং রেসিট্যান্স লাইনের মত যতই প্রাইস ট্রেন্ড লাইনগুলোকে টেস্ট করবে, ট্রেন্ড লাইনগুলো তত শক্তিশালী হবে। জোর করে ট্রেন্ড লাইন আঁকার চেষ্টা করবেন না। সেক্ষেত্রে তা ভ্যালিড ট্রেন্ড লাইন হবে না। আজ এই পর্যন্ত, টেকনিক্যাল এনালাইসিসের পরবর্তী আর্টিকেলে আমরা Trend Line (Part – 2) নিয়ে আলোচনা করব