Technical Analysis -10
Bollinger Band & Support-Resistance টেকনিক্যাল এনালাইসিসে টেকনিক্যাল এনালাইসিস ইন্ডিকেটর, ফর্মুলার অভাব নেই। এদের ভিতর থেকে যেইসব ইন্ডিকেটর পৃথিবীব্যাপী জনপ্রিয়তা পেয়েছে এবং ব্যবহার অনেকটাই সহজবোধ্য সেগুলোকে আপনাদের জানানোর প্রয়াসে গত দিন MACD, MFI এবং RSI সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত পরিসরে আলোচনা করেছি। আজ Bollinger Band এর পালা, সাথে থাকবে স্টক মার্কেটের বহুল উচ্চারিত ও আলোচিত সাপোর্ট-রেজিস্টান্স সম্পর্কে কিছু কথা।
Bollinger Bands: এই টেকনিক্যাল এনালাইসিস ইন্ডিকেটরের আবিষ্কারক হচ্ছেন Jhon Bollinger। ১৯৮০ সালে এটি আবিষ্কৃত হয়। প্রতিটা ইন্ডিকেটর তৈরির পিছনেই নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য থাকে। Bollinger Band তৈরির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে নির্দিষ্ট সময়ের সাপেক্ষে কোন শেয়ারের মূল্যের সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন মূল্যের নির্দিষ্ট সীমা খুঁজে বের করা। সহজ কথায় বলতে গেলে এই ইন্ডিকেটর কোন শেয়ার তার সাপোর্ট/রেজিস্টান্স নাকি সাইডওয়েস অবস্থানে আছে সেটা বুঝিয়ে দেবার জন্য যথেষ্ট। এই Bollinger Band এর উপরে আপার ব্যান্ড , নিচে লোয়ার ব্যান্ড এবং মাঝে মিডল ব্যান্ড থাকে। মিডল ব্যান্ডটিকে ট্রেন্ড ইন্ডিকেটর বলা হয়। সাধারণত মিডল ব্যান্ডের ফর্মুলায় ২০ দিনের সিম্পল মুভিং অ্যাভারেজ(SMA) ব্যবহার করা হয়। তবে EMA ও ব্যবহার করা যায়। যেই মুভিং অ্যাভারেজ ব্যবহার করাই হোক না কেন, ৩ টি ব্যান্ডের জন্যই একই মুভিং অ্যাভারেজ ব্যবহার করতে হয়। এটি এতই শক্তিশালী আর কার্যকরী ইন্ডিকেটর যে, এর আপার ও লোয়ার ব্যান্ড খুব ভালভাবেই শেয়ার মূল্যের রেঞ্জের সাথে মিশে যায়। এর আপার ব্যান্ড শেয়ারের জন্য রেজিস্টান্স এবং লোয়ার ব্যান্ড সাপোর্ট হিসেবে বেশ ভালভাবেই কাজ করে। Bollinger Band এর সাথে যদি ঠিকভাবে ক্যান্ডেল প্যাটার্ন ব্যবহার করতে পারেন তাহলে লাভ আপনার পকেটেই ঢুকবে।
Support & Resistance: স্টক মার্কেটে এসে এই দুটি শব্দ শুনে নাই এমন কেউ নেই। অনেক এনালিস্ট আছেন যারা শুধু সাপোর্ট, রেজিস্টান্স, ট্রেন্ডলাইন ব্যবহার করে ভালো স্টক বিজনেস করছেন। ট্রেন্ডলাইন নিয়ে আরেকদিন বলব। সাধারণত কোন শেয়ারের মূল্য যেমন একটানা বাড়ে না আবার একটানা পড়েও না। দামের এই ঊর্ধ্বমুখী ও নিম্নমুখী যাত্রায় কোথাও না কোথাও বাঁধা পেয়ে গতিপথ পরিবর্তিত হয়ে যায়। স্টক মার্কেটে সাপোর্ট, রেজিস্টান্স শব্দ দুটি শেয়ারের সাপ্লাই, ডিমান্ডের সাথে সম্পর্কিত। স্টক মার্কেটে সাপ্লাই হচ্ছে নেগেটিভ শব্দ যার সাথে রেজিস্টান্স এর খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে আর ডিমান্ড হচ্ছে পজেটিভ শব্দ যার সাথে সাপোর্ট এর খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। যাই হোক বেশি না পেঁচিয়ে সহজ করে বিস্তারিত বলি।
সাপোর্ট কিঃ
কোন শেয়ারের জন্য সাপোর্ট হচ্ছে সেই প্রাইস লেভেল যেখানে সাপ্লাই থেকে ডিমান্ডের শক্তি বেশি হয়। ধরা যাক ‘ক’ নামক কোন শেয়ার ৩ টাকা থেকে ১২ টাকা হল। এরপর শেয়ারটি দর হারিয়ে ৫ টাকায় এসে স্থিতিশীল হল অর্থাৎ সাপোর্ট পেল। এখন কথা হচ্ছে শেয়ারটি ৫ টাকায় সাপোর্ট পেল কেন ৬ টাকা বা অন্য মূল্যতে সাপোর্ট পেল না। যে কোন শেয়ারের যে কোন মূল্য সাপোর্ট পাবার মূল লজিক হচ্ছে শেয়ারের দাম বাড়ার র্যালি হয়ে যাবার পর মূল্য সংশোধনের সময়ে শেয়ারের মূল্য কমতে কমতে একটা পর্যায়ে এসে তুলনামূলকভাবে সস্তা মূল্যে এসে যায় যেখানে ধীরে ধীরে উচ্চ মূল্যে শেয়ার ক্রয় করে আটকে পড়া বিনিয়োগকারীদের লসে শেয়ার বিক্রয় করার পরিমাণ কমে যায় অর্থাৎ শেয়ারের সাপ্লাই কমে যায়। আর সাপ্লাই কমে গেলেই আস্তে আস্তে ডিমান্ড বাড়ে যার ফলে দেখা যায় শেয়ারের সাপোর্ট তৈরি হয়। এই সাপোর্ট তৈরি হবার পিছনে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরণের অদৃশ্য মানসিক সংযোগ কাজ করে যা তাঁদের মনের ভিতর দৃঢ় বিশ্বাস তৈরি করে যে শেয়ারটির মূল্য এর থেকে আর কম হতে পারে না। যার প্রতিফলন দেখা যায় শেয়ারের মূল্যে। তবে কোন কারণে যদি বিনিয়োগকারীদের মনে শেয়ারটির সাপোর্ট নিয়ে সংশয় হয় তাহলে শেয়ারটির মূল্য আরও কমে যায় এবং আগের লো প্রাইস থেকে নতুন লো প্রাইস হয়। সাপোর্ট অনুমান করার/বোঝার
উপায়ঃ শেয়ারের সাপোর্ট মূল্য বুঝতে বা অনুমান করতে ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন এর পাশাপাশি বলিঞ্জার ব্যান্ড, ফিবোনাচ্চি খুব ভালভাবে সাহায্য করে।
রেজিস্টান্সঃ সাপোর্ট এর বিপরীত হচ্ছে রেজিস্টান্স। প্রায় সময় দেখা যায় কোন একটি শেয়ার ঊর্ধ্বমুখী যাত্রা শুরু করার পর এমন একটি উচ্চ মূল্যে চলে আসে যখন শেয়ারটি সেই উচ্চ মূল্যকে অনেক চেষ্টা করেও অতিক্রম করে নতুন উচ্চ মূল্যে যেতে পারে না। যতই শেয়ারটি উচ্চ মূল্যকে অতিক্রম করার চেষ্টা করে ততই শেয়ারটির সাপ্লাই বেড়ে যায়। এই বিষয়টিকেই রেজিস্টান্স বলা হয়। শেয়ারের রেজিস্টান্স তৈরি হবার মূল কারণ হচ্ছে শেয়ারের মূল্য নিজেই!!! জি, আপট্রেন্ড র্যালির শেষ পর্যায়ে শেয়ারের মূল্য এমন উচ্চ মূল্যে এসে পৌছায় যে অনেক বিনিয়োগকারী শেয়ারটি নতুন করে ক্রয় করার আগে লাভ পাবার ব্যাপারে ভাবতে বাধ্য হোন আর যাদের কাছে শেয়ার থাকে তারা শেয়ার বিক্রি করায় মনযোগী হয়ে থাকেন। ডিমান্ড থেকে সাপ্লাই বেশি হয়ে যায় আর পরবর্তীতে শেয়ারের মূল্য শার্প ফল করে থাকে। এই রেজিস্টান্স তৈরি হবার পিছনে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরণের অদৃশ্য মানসিক সংযোগ কাজ করে যা তাঁদের মনের ভিতর দৃঢ় বিশ্বাস তৈরি করে যে শেয়ারটির মূল্য এর থেকে আর বেশি হতে পারে না। যার প্রতিফলন দেখা যায় শেয়ারের মূল্যে। রেজিস্টান্স অনুমান করার/ বোঝার উপায়ঃ সাপোর্ট নির্ণয় করার মতই। শেয়ারের রেজিস্টান্স মূল্য বুঝতে বা অনুমান করতে ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন এর পাশাপাশি বলিঞ্জার ব্যান্ড, ফিবোনাচ্চি খুব ভালভাবে সাহায্য করে।
টেকনিক্যাল এনালাইসিসের অনলাইন ট্রেনিং অথবা টিউটোরিয়াল ভিডিও সংগ্রহ করতে যোগাযোগ করুন। ফোন ঃ- ০১৬২৫০২৩৪৫৯
ইমেইল ঃ skonlinemultivision@gmail.com